সুখে থাকাই বড় আভিজাত্য
অনেক
স্বচ্ছল পরিবার/মুরুব্বীরা ইচ্ছাকৃতভাবে সন্তানদের জন্য জাহান্নাম ক্রয়
করতে দ্বিধা করেন না। অনেকের সারাজীবনের স্বপ্ন থাকে এক টুকরা জাহান্নাম
ক্রয় করা। যেমন-
১। ছেলের কোনোভাবেই ছাত্রজীবনে বিয়ে করা যাবেনা, চাকরীও বেসরকারী হলেও চলবেনা। সরকারি চাকরি লাগবে। এর মাঝে যদি ৪/৫ টা প্রেম করেন তবুও কোনো অভিভাবকের মান সম্মান যাবেনা।
মেয়েদেরও একটা চাকরির ব্যবস্থা করতেই হবে। চাকরি নিয়ে বিয়ে দিলে শ্বশুড়বাড়ি সম্মান দিবে, পায়ে মাটি থাকে! যদি মেয়ের বয়স ৩০ হয়েও যায় তবুও সমস্যা নাই। কিন্তু আগেই যদি ছেলে/মেয়েরা বিয়ের কথা বলে তাহলে সমাজে মুরুব্বীরা মুখ দেখাতে পারেন না। তাদের সব অর্জন,স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। তারপর?
২। ২৯-৩৩ বছর বয়সে চাকরীতে জয়েন করবেন। নিজে টাকা কামাই করতে হবে। কামাই করে জামাই হতে হবে। সব পরিবার তো আর সন্তানের বিয়ের জন্য টাকা সঞ্চয় করে রাখেনা। ৬ মাস থেকে কয়েক বছর অপেক্ষা করে দেখতে হবে আপনার স্ট্যাটাসের সাথে মিলে এমন পরিবার,পাত্রী খোঁজতে হবে। উনাদের দৃষ্টিসীমার চেয়েও বড় লোভ, অহংকার ও আভিজাত্যের সীমা! নিজেদের দিকে না তাকিয়েও সেই সীমা অবদি খোঁজা অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে, জয়েন করলেই তো লম্বা বিয়ের ছুটি দিয়ে দিবেনা। স্ট্যাবল হতে বেশিরভাগেরই সময় লাগে।
৩। পাত্রী/পাত্র পাওয়া গেল। এরপর যৌতুক শব্দটি উচ্চারণ না করেও অর্থ ও মালামাল অাদায়ের জন্য অভিনব সিস্টেমে মেয়ের/ছেলের মুরুব্বীদের কুৎসিৎ যুক্তিতর্ক চলতে থাকে। মাঝেমধ্যে মনেহয় যতো বেশি দেনমোহর,অলংকারাদি ততো বেশি টেকসই বিয়ে! এখানে দেনমোহর দিয়ে চারিত্রিক সনদ, যোগ্যতা, আভিজাত্যও বিচার করা হয়!
৪। বিয়ের সময় কমপক্ষে দুদিনের জন্য হলেও বর আর কনেকে সিনেমার নায়ক নায়িকা বানাতে হবে। দুনিয়ার সব মানুষের সামনে আপনি বউকে জড়ায়ে ধরবেন, সবাই হাততালি দিবে, ছবি তোলবে। কোথাও কোথাও নাকি প্রকাশ্যে চুমুও খাওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছে।
৫। মুরুব্বীদেরকে তাদের কলিগ/প্রতিবেশিদের কাছে গর্ব করে বলতে হবে আমার ছেলে/মেয়ের বউ/জামাই অমুক মন্ত্রীর আত্মীয়, তমুক সচিবের ভাতিজী অথবা তার ভাইয়েরা,আত্মীয়রা আম্রিকা, জাপানে সেটলড, ওদের কয়েকশ বিঘা জমি আছে। সোজাকথা নিজেদের জীবনে যতো অপ্রাপ্তি আছে সবকিছুই পুলাপানের ঘাড়ে চাপাইয়া দিতে হবে।
৬। কয়েক মাস যাবে ওয়েডিং হ্যাংওভারে(Wedding Hangover)। তারপর শুনা যায় বৌ-শ্বাশুড়িদের পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষের কাহিনী। আসল কথা হলো কোনো সম্পর্কের গোড়াপত্তন যদি ‘লোভ/অহংকার’ দিয়ে শুরু করতে যান তাহলে এর খারাপ পরিণতি দেখার জন্য প্রস্তুত থাকতেই হবে। সুন্দর, হাসিখুশি জীবনের চেয়ে আভিজাত্য,অহংহারকে প্রাধান্য দিলে এর চেয়ে ভাল কিছু আশা করা ঠিকও না।
মোটকথা, পারিবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা-অনাচারের জন্য একতরফাভাবে ইয়ং জেনারেশনদের দোষারোপ করে লাভ নাই। এরা বেশিরভাগই পরিস্থিতির শিকার। এসবের জন্য সামাজিক সিস্টেমের সাথে সাথে পারিবারিক ঘাউরামি অনেকাংশে দায়ী। আশেপাশে, পরিচিত মহলের কিছু পরিবারের ঘটনা দেখে এমনই মনে হয়।
কিছু সমাধানঃ
১। স্বচ্ছল পরিবারের মুরুব্বীরা ছেলে/মেয়েকে বয়স হলেই বিয়ের চিন্তা করতে পারেন। চাকরী পাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রত্যেকের পরিবার তার ছেলে/মেয়ের খরচ বহন করবে। আমি যাদেরকে দেখেছি ছাত্রজীবনেই বিয়ে করেছে তাদের বেশিরভাগেরই ভাল রেজাল্ট হয়েছে, সুন্দর গোছালো পরিচ্ছন্ন হাসিখুশি জীবনযাপন করতে দেখেছি।
২। বিয়েটাকে সহজ, সুন্দর উৎসবে পরিণত করতে পারি। বৌ-ভাতের নামে অর্থ/মালামাল উপার্জনের উৎস হিসেবে দেখা বন্ধ করা দরকার।
৩। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নামক ব্যবসায়িদের হতে দূরে থাকতে পারি। নিজেরা, বন্ধুরা, আত্মীয়রা সাজাবে.... সামাজিক বন্ধন-ভ্রাতৃত্ববোধ শক্তিশালি হবে।
৪। ২২-২৫ বছরের মধ্যেই বিয়েটা শেষ করা যেতে পারে। দেখা যায়, এসময় মানুষ বেশি সংখ্যক বন্ধুদের সান্নিধ্যে থাকে। যখনই চাকরি জীবনে চলে যায় তখন বন্ধুত্বের সার্কেল বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়। সহজে একত্রিত হতে পারেনা।
৫। বিয়ের বিশাল ভোজ হতেই হবে, দামি উপহার দিতে হবে এমন ভাবনাগুলো দূর করতে পারি। সবকিছুই সামর্থ অনুযায়ী হবে।
৬। কোনো রকম দাম্পত্য কলহ/এডজাস্ট করতে না পারলে তালাক এবং বিধবা বিবাহকেও সুন্দর, সহজ দৃষ্টিতে দেখার অভ্যাস গড়তে পারি। অন্যায়,পাপাচার, উচ্ছৃঙ্খলা কিছুটা হলেও কমবে।
ফাইনালি, আমি মনেকরি বাবা-মা/মুরুব্বীদের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো এমন পুলাপান গড়ে তোলা-
১। যারা বার্ধক্যে পৌঁছানো বাবা-মায়েদের ঠিকমতো খোঁজখবর রাখবে। এবং
২। যখন উনারা ইন্তেকাল করবেন আর তাঁদের সকল সওয়াব কামানোর দরজা বন্ধ হয়ে যাবে তখন সেসব সন্তানেরা মন থেকে নিয়মিত দোয়া অব্যাহত রাখবে।
এর চেয়ে বড় অর্জন কোনো মুরুব্বীর/বাবা-মায়েদের হতে পারেনা।
সুতরাং, অতিরিক্ত লোক দেখানো, সামাজিকতা, আভিজাত্য, নাটক ফাটক বন্ধ হোক। প্রতিটি পরিবার সুন্দরভাবে বেচেঁ থাকুক, সমাজটা উচ্ছৃঙ্খলতামুক্ত হোক.... সবার মনে একটা ধারণাই জন্মাক,
”সুখে থাকাই বড় আভিজাত্য”
১। ছেলের কোনোভাবেই ছাত্রজীবনে বিয়ে করা যাবেনা, চাকরীও বেসরকারী হলেও চলবেনা। সরকারি চাকরি লাগবে। এর মাঝে যদি ৪/৫ টা প্রেম করেন তবুও কোনো অভিভাবকের মান সম্মান যাবেনা।
মেয়েদেরও একটা চাকরির ব্যবস্থা করতেই হবে। চাকরি নিয়ে বিয়ে দিলে শ্বশুড়বাড়ি সম্মান দিবে, পায়ে মাটি থাকে! যদি মেয়ের বয়স ৩০ হয়েও যায় তবুও সমস্যা নাই। কিন্তু আগেই যদি ছেলে/মেয়েরা বিয়ের কথা বলে তাহলে সমাজে মুরুব্বীরা মুখ দেখাতে পারেন না। তাদের সব অর্জন,স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। তারপর?
২। ২৯-৩৩ বছর বয়সে চাকরীতে জয়েন করবেন। নিজে টাকা কামাই করতে হবে। কামাই করে জামাই হতে হবে। সব পরিবার তো আর সন্তানের বিয়ের জন্য টাকা সঞ্চয় করে রাখেনা। ৬ মাস থেকে কয়েক বছর অপেক্ষা করে দেখতে হবে আপনার স্ট্যাটাসের সাথে মিলে এমন পরিবার,পাত্রী খোঁজতে হবে। উনাদের দৃষ্টিসীমার চেয়েও বড় লোভ, অহংকার ও আভিজাত্যের সীমা! নিজেদের দিকে না তাকিয়েও সেই সীমা অবদি খোঁজা অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে, জয়েন করলেই তো লম্বা বিয়ের ছুটি দিয়ে দিবেনা। স্ট্যাবল হতে বেশিরভাগেরই সময় লাগে।
৩। পাত্রী/পাত্র পাওয়া গেল। এরপর যৌতুক শব্দটি উচ্চারণ না করেও অর্থ ও মালামাল অাদায়ের জন্য অভিনব সিস্টেমে মেয়ের/ছেলের মুরুব্বীদের কুৎসিৎ যুক্তিতর্ক চলতে থাকে। মাঝেমধ্যে মনেহয় যতো বেশি দেনমোহর,অলংকারাদি ততো বেশি টেকসই বিয়ে! এখানে দেনমোহর দিয়ে চারিত্রিক সনদ, যোগ্যতা, আভিজাত্যও বিচার করা হয়!
৪। বিয়ের সময় কমপক্ষে দুদিনের জন্য হলেও বর আর কনেকে সিনেমার নায়ক নায়িকা বানাতে হবে। দুনিয়ার সব মানুষের সামনে আপনি বউকে জড়ায়ে ধরবেন, সবাই হাততালি দিবে, ছবি তোলবে। কোথাও কোথাও নাকি প্রকাশ্যে চুমুও খাওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছে।
৫। মুরুব্বীদেরকে তাদের কলিগ/প্রতিবেশিদের কাছে গর্ব করে বলতে হবে আমার ছেলে/মেয়ের বউ/জামাই অমুক মন্ত্রীর আত্মীয়, তমুক সচিবের ভাতিজী অথবা তার ভাইয়েরা,আত্মীয়রা আম্রিকা, জাপানে সেটলড, ওদের কয়েকশ বিঘা জমি আছে। সোজাকথা নিজেদের জীবনে যতো অপ্রাপ্তি আছে সবকিছুই পুলাপানের ঘাড়ে চাপাইয়া দিতে হবে।
৬। কয়েক মাস যাবে ওয়েডিং হ্যাংওভারে(Wedding Hangover)। তারপর শুনা যায় বৌ-শ্বাশুড়িদের পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষের কাহিনী। আসল কথা হলো কোনো সম্পর্কের গোড়াপত্তন যদি ‘লোভ/অহংকার’ দিয়ে শুরু করতে যান তাহলে এর খারাপ পরিণতি দেখার জন্য প্রস্তুত থাকতেই হবে। সুন্দর, হাসিখুশি জীবনের চেয়ে আভিজাত্য,অহংহারকে প্রাধান্য দিলে এর চেয়ে ভাল কিছু আশা করা ঠিকও না।
মোটকথা, পারিবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা-অনাচারের জন্য একতরফাভাবে ইয়ং জেনারেশনদের দোষারোপ করে লাভ নাই। এরা বেশিরভাগই পরিস্থিতির শিকার। এসবের জন্য সামাজিক সিস্টেমের সাথে সাথে পারিবারিক ঘাউরামি অনেকাংশে দায়ী। আশেপাশে, পরিচিত মহলের কিছু পরিবারের ঘটনা দেখে এমনই মনে হয়।
কিছু সমাধানঃ
১। স্বচ্ছল পরিবারের মুরুব্বীরা ছেলে/মেয়েকে বয়স হলেই বিয়ের চিন্তা করতে পারেন। চাকরী পাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রত্যেকের পরিবার তার ছেলে/মেয়ের খরচ বহন করবে। আমি যাদেরকে দেখেছি ছাত্রজীবনেই বিয়ে করেছে তাদের বেশিরভাগেরই ভাল রেজাল্ট হয়েছে, সুন্দর গোছালো পরিচ্ছন্ন হাসিখুশি জীবনযাপন করতে দেখেছি।
২। বিয়েটাকে সহজ, সুন্দর উৎসবে পরিণত করতে পারি। বৌ-ভাতের নামে অর্থ/মালামাল উপার্জনের উৎস হিসেবে দেখা বন্ধ করা দরকার।
৩। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নামক ব্যবসায়িদের হতে দূরে থাকতে পারি। নিজেরা, বন্ধুরা, আত্মীয়রা সাজাবে.... সামাজিক বন্ধন-ভ্রাতৃত্ববোধ শক্তিশালি হবে।
৪। ২২-২৫ বছরের মধ্যেই বিয়েটা শেষ করা যেতে পারে। দেখা যায়, এসময় মানুষ বেশি সংখ্যক বন্ধুদের সান্নিধ্যে থাকে। যখনই চাকরি জীবনে চলে যায় তখন বন্ধুত্বের সার্কেল বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়। সহজে একত্রিত হতে পারেনা।
৫। বিয়ের বিশাল ভোজ হতেই হবে, দামি উপহার দিতে হবে এমন ভাবনাগুলো দূর করতে পারি। সবকিছুই সামর্থ অনুযায়ী হবে।
৬। কোনো রকম দাম্পত্য কলহ/এডজাস্ট করতে না পারলে তালাক এবং বিধবা বিবাহকেও সুন্দর, সহজ দৃষ্টিতে দেখার অভ্যাস গড়তে পারি। অন্যায়,পাপাচার, উচ্ছৃঙ্খলা কিছুটা হলেও কমবে।
ফাইনালি, আমি মনেকরি বাবা-মা/মুরুব্বীদের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো এমন পুলাপান গড়ে তোলা-
১। যারা বার্ধক্যে পৌঁছানো বাবা-মায়েদের ঠিকমতো খোঁজখবর রাখবে। এবং
২। যখন উনারা ইন্তেকাল করবেন আর তাঁদের সকল সওয়াব কামানোর দরজা বন্ধ হয়ে যাবে তখন সেসব সন্তানেরা মন থেকে নিয়মিত দোয়া অব্যাহত রাখবে।
এর চেয়ে বড় অর্জন কোনো মুরুব্বীর/বাবা-মায়েদের হতে পারেনা।
সুতরাং, অতিরিক্ত লোক দেখানো, সামাজিকতা, আভিজাত্য, নাটক ফাটক বন্ধ হোক। প্রতিটি পরিবার সুন্দরভাবে বেচেঁ থাকুক, সমাজটা উচ্ছৃঙ্খলতামুক্ত হোক.... সবার মনে একটা ধারণাই জন্মাক,
”সুখে থাকাই বড় আভিজাত্য”

No comments