Header Ads

Header ADS

মাগনা ট্রানজিট ০২

গচ্চা যাবে ৫০ হাজার কোটি টাকা
॥আহমাদ সালাহউদ্দীন॥
বহু ঢাক-ঢোল পিটিয়ে এবং বছরে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অবশেষে বর্তমান সরকার ভারতকে পানির দামে ট্রানজিট দিতে যাচ্ছে। তবে এই ট্রানজিট প্রদান করতে বাংলাদেশকে ৭ বিলিয়ন ডলার বা ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। যা হবে ভয়াবহ আত্মঘাতী। আগামী সপ্তাহে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনোমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে এই ট্রানজিট চুক্তি স্বার হতে যাচ্ছে। প্রতিটন ভারতীয় পণ্যের েেত্র কিলোমিটার প্রতি আড়াই সেন্ট বা ১৮ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ মাত্র ৭ সেন্ট বা ৫০ পয়সা পর্যন্ত ট্রানজিট মাশুল নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে সরকারের ট্যারিফ কমিশন নিয়ন্ত্রিত কোর কমিটি। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তার নির্ধারিত আগের ফিস বাতিল করে এখন নতুনভাবে ট্রানজিট ফি বা মাশুল নির্ধারণের সুপারিশ করেছে টনপ্রতি মোট ৫৮০ টাকা অর্থাৎ মাত্র ৮ ডলার। এনবিআর সড়ক, রেল ও নৌপথে পণ্য পরিবহনের েেত্র একই হারে ফি আদায়ের কথা বললেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ট্যারিফ কমিশন সড়ক, রেল ও নৌপথে তিন ধরনের ট্রানজিট ফিস আরোপের প্রস্তাব করেছে। যা হচ্ছে নৌপথে আড়াই সেন্ট, রেলপথে ৩ সেন্ট এবং সড়কপথে সর্বোচ্চ ৭ সেন্ট। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে পণ্য পরিবহনের েেত্র এই হার ভারতসহ অন্যান্য দেশের েেত্রও প্রযোজ্য হবে। এনবিআর ও ট্যারিফ কমিশনের দেয়া এই সুপারিশ পরীা-নিরীা করে দেখা হচ্ছে। তবে এই হারে বছরে সরকার ট্রানজিট বাবদ ১শ’ কোটি টাকাও আয় করতে পারবে না বলে অর্থনীতিবিদরা হুঁশিয়ার করে দিয়ে জানিয়েছেন, এর ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্যগুলোতে বার্ষিক প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের যে বাজার সম্ভাবনা রয়েছে, তা পুরোপুরি হারাতে হবে। এদিকে ট্রানজিট শুল্কের প্রস্তাবিত নতুন হার চূড়ান্ত করার আগে সরকার ভারতের মতামতও নেবে বলে জানা গেছে। তবে শুল্ক হার চূড়ান্ত করার আগেই ট্রানজিট চুক্তিটি সম্পন্ন হয়ে যাবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিগত ২০১০-১১ অর্থবছরের বাজেটে পণ্যবাহী কার্গোর েেত্র প্রতিটনে এক হাজার টাকা এবং প্রতি কন্টেইনারে ১০ হাজার টাকা মাশুল আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন। তাও ছিল খুব কম। এ বিষয়ে এনবিআর থেকে গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু ভারতের চাপে পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী মুহিত সুইজারল্যান্ডের মতো বাংলাদেশকে ট্রানজিট পরিবহন দেশ বানানোর যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তাতে এই ট্রানজিট বাংলাদেশের ভৌত অবকাঠামো, রপ্তানি, বন্দর, নিরাপত্তা প্রভৃতির ওপর সার্বিকভাবে কি প্রভাব পড়বে তা বিবেচনা করা না হলে বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ড না হয়ে সিকিম হয়ে যেতে পারে। ট্রানজিট ফি আদায়ের বিধি অর্থমন্ত্রী নিজেই বাতিল করে দিয়ে ‘বড় পাপ’ করেছেন অভিযোগ করে আনোয়ার জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা পর্যন্ত একটি ট্রাক ভাড়াই পড়ে বর্তমানে ৪০ হাজার রুপি বা ৭০ হাজার টাকা এবং সময় লাগে প্রায় এক সপ্তাহ। এখন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে আগরতলা থেকে কলকাতা যেতে তাদের সর্বোচ্চ দেড়দিন সময়ে খরচ পড়বে বড়জোর ১২ হাজার রুপি বা ২০ হাজার টাকা। অপরদিকে আগরতলা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে যেতে মাত্র আড়াই ঘণ্টা সময়ে খরচ পড়বে সর্বোচ্চ দেড় থেকে দু’ হাজার রুপি বা তিন হাজার টাকা। যেটা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে যাওয়ার একটি ট্রাকভাড়ার তিন ভাগের এক ভাগ মাত্র। বাংলাদেশের ভয়াবহ তি করে ভারতকে এতো সুবিধা দেয়ার পরেও সরকার তার প্রথম ধার্য্যকৃত নাম মাত্র ফিও বাতিল করে দিয়েছে, প্রায় বিনামূল্যে ভারতকে ট্রানজিট প্রদান করে আরো কিছুদিন মতায় থাকার উদ্দেশ্যে। কারণ বিদেশি খ্যতিমান মিডিয়াগুলোই সম্প্রতি প্রকাশিত সংবাদে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারকে মতায় আনতে বিগত নির্বাচনে ভারত বিপুল অর্থ  বিনিয়োগ করেছিল। যার প্রতিদান এ সরকার এখন ভারতকে দিচ্ছে। এমকে আনোয়ার বলেন, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার বিধি অনুযায়ী ট্রানজিট ফি বা মাশুল আদায় করা হলে বাংলাদেশের সড়ক সংরণে জনগণের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানোর প্রয়োজন হতো না। সরকার যখন দেশের জনগণের স্বার্থ রায় সড়ক সংরণ তথা সংস্কারে দারুণভাবে ব্যর্থ হচ্ছে তখন ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার পর এদেশের সড়কগুলোর কি শোচনীয় অবস্থা হবে এবং তা মেরামতে প্রতিবছর কত হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে তা এখন সহজেই অনুমেয়। ট্রানজিট তখন এ সরকারের ওপরই বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়ে দাঁড়াবে। 
আঞ্চলিক কাঠামোয় ট্রানজিটের পরামর্শ
শুধু ভারতকে মূল বিবেচনায় রেখে তাদের ট্রানজিট দেয়ার বর্তমান প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের সাবেক দুজন রাষ্ট্রদূত। তারা ট্রানজিটকে দ্বিপীয় বা উপ-আঞ্চলিক পরিসরে সীমিত না রেখে পুরো সার্ক ও বিমসটেকব্যাপী বৃহত্তর আঞ্চলিক পরিসরে একে বিবেচনা করার তাগিদ দিয়েছেন। ট্রানজিট প্রদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেন ট্রানজিট-সুবিধা গ্রহণকারীর মতো সমভাবে লাভবান হতে পারে, সে প্রক্রিয়া অনুসরণ করারও তাগিদ দিয়েছেন তারা। ট্রানজিট প্রদানে চলমান প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট হুমায়ূন কবির বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে বহু বছর যাবৎ ট্রানজিট-সুবিধা চালু রয়েছে। কিন্তু কখনো কি এর লাভ-তি বিশ্লেষণ করা হয়েছে? তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘চিকেন নেক’ (শিলিগুড়ি করিডোর) দিয়ে প্রতি বছর ভারতের মূল ভূখণ্ড উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোয় আনা-নেয়া করা হয়, এমন কোনো সমীা কি বাংলাদেশে হয়েছে, যার ভিত্তিতে ট্রানজিট সুবিধা দিলে পণ্যের পরিবহন প্রাক্কলন করা যাবে? হুমায়ূন কবির বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, শুধু ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার জন্য এত আয়োজন। কিন্তু ভারত ও চীন রেলপথে যোগাযোগ সৃষ্টি করছে। সেখানে বাংলাদেশ কোথায় যাবে? চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ কি সেই পথে ট্রানজিট নিতে পারবে? ট্রানজিট প্রক্রিয়াটি শুধু ভারত কিংবা নেপাল-ভুটানকে নিয়ে উপ-আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গিতে না দেখে চীন ও মিয়ানমার, এমনকি থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক কাঠামোর দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার পরামর্শ দেন তিনি। হুমায়ূন কবির আরও বলেন, ট্রানজিট হলো একটি কৌশলগত সম্পদ, সমঝোতার মাধ্যমে এর সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে হবে। হুমায়ূন কবির বলেন, ট্রানজিট অবকাঠামো তৈরিতে ৭০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রাক্কলন করা হলেও এর উৎস কি হবে তা স্পষ্ট নয়। আর এই অর্থ এ খাতে বিনিয়োগ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট কিংবা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের অবকাঠামো তৈরির চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার কিনা তাও স্পষ্ট করা দরকার।
আরেক সাবেক রাষ্ট্রদূত আশফাকুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিত পুরো ট্রানজিট প্রক্রিয়াটি সংশোধন করা উচিত। ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক ভালো থাকার কারণে আমরা তাদের অর্থনৈতিক করিডোর দিতে চাচ্ছি, এটি আসলে ট্রানজিট নয়। কেননা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য আনা-নেয়ার জন্য ভারতের একটি রুট থাকা সত্ত্বেও আমরা তাদের সংপ্তি পথে স্বল্প সময়ে অনেক কম খরচে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছি। আমরা ভুল পদ্ধতি অনুসরণ করছি। কারণ এতে বাংলাদেশের বাজার সৃষ্টির পরিবর্তে বরং বাজার খোয়ানোর আশংকাই বেশি। যা এখনো আমলে নেয়া হয়নি এবং এ ব্যাপারে কোনো সমীাও করা হয়নি। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা আরো বেড়ে যাবে। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি সড়ক বা রেল যোগাযোগ চালুর জন্য এ ধরনের ট্রানজিট বা করিডোর চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভারত তা কোনোদিনই দেয়নি। অথচ আজ ভারতই তা পেতে যাচ্ছে, তার বিকল্প পথ থাকা সত্ত্বেও।
তেমন আর্থিক লাভ হবে না : ড. মুরশিদ
ওদিকে ট্রানজিট থেকে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার বড় বড় অঙ্কের ফানুস আকাশে উড়ানোর পর এখন বিভ্রান্তি আরো বেড়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. কেএএস মুরশিদ। বিআইডিএসের এই গবেষকের মতে, বাস্তবতার আলোকেই ট্রানজিট থেকে আর্থিকভাবে তেমন একটা লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগই বর্তমানে বাংলাদেশের নেই। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. কেএএস মুরশিদ বলেন, ট্রানজিট দিয়ে শত কোটি ডলার পাওয়ার যেসব কথাবার্তা বলা হয়েছে, তা আসলে বাস্তবসম্মত নয়।
ট্রানজিট হবে আত্মঘাতী : ড. দেবপ্রিয়
অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ট্রানজিট চুক্তি করা হবে বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী। কারণ ট্রানজিট নিয়ে ভারতের সঙ্গে এখনই কোনো চুক্তি করার মতো অবস্থায় বাংলাদেশ নেই। জনমত গঠন ব্যতিরেকে এবং পর্যাপ্ত সমীা ছাড়া যথাযথ দর-কষাকষি না করে কোনো চুক্তি করা হলে তা হবে অপরিণামদর্শী ও আত্মঘাতী। তার মতে, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ার বিষয়টি দৃশ্যমান না হলে কোনো চুক্তিই রাজনৈতিকভাবে টেকসই হবে না। দেবপ্রিয় বলেন, ভারতের প থেকে যখন বলা হচ্ছে, তারা যৌক্তিক মাশুল দেবে, তখন আমাদের নীতিনির্ধারকদের প থেকে বলা হচ্ছে, কেন আমরা মাশুল নেব? এ সব কথা বাংলাদেশের দর-কষাকষির জায়গাটি দুর্বল করে দিচ্ছে। অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রানজিট বিষয়ক নীতি-বিধির বিষয়টি টেনে আনা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, ডব্লিউটিওর নীতি-বিধান যদি মানতেই হয়, তাহলে মৌলিক নীতি আগে অনুসরণ করতে হবে, যেটা হলো সমতার নীতি। অর্থাৎ ডব্লিউটিওর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ভারতকে ট্রানজিট-সুবিধা দিলে মিয়ানমার, পাকিস্তান বা চীন চাইলে তাদেরও একইভাবে সুবিধা দিতে হবে। দেবপ্রিয় বলেন, ভারতের সঙ্গে ট্রানজিটের বিষয়টি নিতান্তই দ্বিপীয় বিষয়। নেপাল ও ভুটানকে যুক্ত করলে বড়জোর এটি উপ-আঞ্চলিক বিষয় হিসেবে গণ্য হবে। এখানে বহুপীয় ডব্লিউটিও অপ্রাসঙ্গিক। দেবপ্রিয় আরও বলেন, দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে ট্রানজিট দিতে হবে। কারণ বাংলাদেশের ভূমি অপ্রতুল। এ দেশের ওপর দিয়ে ট্রানজিটের জন্য আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামো নির্মাণে রাস্তাঘাট আরো সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তিনি প্রশ্ন করেন, জমির দাম কে নির্ধারণ করবে? সস্তায় গরিব-কৃষকের জমি নিয়ে রাস্তা করবেন? দেবপ্রিয় ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত কয়লাখনি ও আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর করার পরিকল্পনায় স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন। ট্রানজিটের জন্য বিনিয়োগের অর্থায়ন কিভাবে হবে, সেটাও এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আঞ্চলিক যোগাযোগ সম্পৃক্ততার পে অবস্থান নিয়েও জাতীয় স্বার্থ রা করা যায়। ট্রানজিট ও সম্পৃক্ততা বিষয়ক বিষয়গুলোকে এভাবেই চিন্তা করতে হবে। দেবপ্রিয় বলেন, সবচেয়ে বড় কথা, ট্রানজিট নিয়ে মৌলিক নীতিই পরিষ্কার হয়নি। কত বিনিয়োগ লাগবে, কিভাবে অর্থায়ন হবে, কোনো ধরনের পরিবহন চলাচল করবে- এগুলো অনিশ্চিত রেখে কেন চলতি মাসের মধ্যেই ট্রানজিট ফি চূড়ান্ত করতে হচ্ছে, তা জানতে চান তিনি। ট্রানজিটের রাজনৈতিক ব্যঞ্জনা উপো করার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেন, দ্বিপীয় রাজনৈতিক দর-কষাকষির সুযোগ হেলাফেলা করা অপরিণামদর্শিতার পরিচায়ক। আর বাংলাদেশ তো ট্রানজিটের নামে দানপত্র খুলে বসেনি। প্রশাসনিক ব্যয় ও রণাবেণের যথাযথ মাশুল আদায় করতেই হবে। এই ট্রানজিট না পেলে ভারতের কি পরিমাণ লোকসান হবে কিংবা বাংলাদেশের বাজার সম্প্রসারণে কি পরিমাণে লাভতি হবে, তাও বিবেচনায় নিয়ে হিসেব কষতে হবে।
উল্লেখ্য, ভারত তার মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্ব সাতটি রাজ্যে সহজে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশের ভূখণ্ড এবং মংলা বন্দরও ব্যবহার করতে চাইছে তারা। এ অবস্থায় ভারতের সাথে নেপাল ও ভুটানকেও ট্রানজিট দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। ট্রানজিট কার্যকর করলে কি হারে ফি আদায় করা হবে এবং কোনো কোনো খাতে এটা কিভাবে নেয়া হবে, সেটির প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে সরকারের কোর কমিটি। ওই কমিটির প্রধান হচ্ছেন ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান। কমিটি কাস্টমস সংক্রান্ত ফি নির্ধারণের দায়িত্ব দিয়েছিল এনবিআরকে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা গত মাসে মূল কমিটির কাছে জমা দিয়েছে এনবিআর। অন্যদিকে যোগাযোগ, পরিবেশ ও নৌ মন্ত্রণালয় অন্যান্য ফি নির্ধারণের কাজও শেষ করেছে। আর সম্পূর্ণ বিষয়টি তদারক করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এ বিষয়ে মূল দায়িত্ব পালন করছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। ইতোমধ্যে তিনি কয়েক দফা ভারত ঘুরেও এসেছেন। কোর কমিটি স্বল্পতম সময়ে ট্রানজিটের বিষয়ে যে অবস্থানপত্রের খসড়া দাঁড় করায় তাতে অবকাঠামোগত অপ্রতুলতায় আগামী তিন বছরের মধ্যে রেল ও সড়কপথে ট্রানজিট দেয়া সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে এই সময়কালে ট্রান্সশিপমেন্ট চালু করা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের পদপে নিতে ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে কোনো প এই বিনিয়োগ করবে তা বলা হয়নি।
এদিকে, সরকার গঠিত ট্রানজিট বিষয়ক কোর কমিটি ভারতের সাথে ১২টি রুট ব্যবহারের সুপারিশ করলেও আপাতত দুটির অনুমতি দেবে সরকার। কমিটি বলেছে, প্রস্তাবিত রুট দুটি ব্যবহার করলে এ মুহূর্তে বাংলাদেশ বেশি লাভবান হবে। অবশিষ্ট রুটগুলো এখনই ব্যবহারের উপযোগী নয়। প্রস্তাবিত দুটি রুট হবে সড়কপথে। বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ট্রানজিট চুক্তির খসড়া এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে দুদেশের সরকার প্রধানের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বার হবে। ভারত ১৫টি রুট ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল, যার বেশিরভাগই চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
ট্রানজিট চুক্তির বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর আরেক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এ সম্পর্কে বলেন, প্রস্তাবিত ট্রানজিট একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া হলেও আমরা এখনই এর আংশিক শুরু করতে চাই। ট্রানজিটের সফল বাস্তবায়ন করতে হলে সবার আগে অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর বিনিয়োগ। সরকারের একার পে এ বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়। এর জন্য বেসরকারি খাতসহ বিদেশি দাতাদের সহযোগিতা ও ঋণ লাগবে। এ-সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কোর কমিটি যে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে, তা মূলত ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের নির্দেশনার আলোকেই হয়েছে অভিযোগ করে এই রিপোর্ট জনগণের জন্য প্রকাশ করা হবে কিনা, জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এ প্রতিনিধিকে বলেন, পরীা-নিরীা করে তা প্রকাশ করা হবে। পানি বণ্টন ও সীমান্ত বিরোধসহ দ্বিপীয় বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তির বহু েেত্র ভারত যেখানে অতীত প্রতিশ্র“তি রা করেনি, সেখানে এ রকম অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ কিভাবে ট্রানজিট নিয়ে সুফল প্রত্যাশা করবে এবং সুফল না পেলে তখন কেউ তিপূরণ দেবে কিনা -এমন প্রশ্নের জবাবে গওহর রিজভী বলেন, কয়েক মাস অপো করুন। অনেক কিছুই দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। আর এই সরকার আরও প্রায় আড়াই বছর মতায় আছে। আমরা রাস্তাঘাট, সমুদ্র, টেলিফোন, ইন্টারনেট, স্যাটেলাইটসহ নানা উপায়ে ভারতের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছি। তারা আমাদের পরিবহন ভাড়া দেবে, ট্রানজিট মাশুল বা ব্যবহারের মাশুল দেবে, অবকাঠামো উন্নয়নের বিনিয়োগে আরো ঋণ দেবে। সুতরাং এতো আয়োজন নিশ্চয়ই বিফলে যাবে না। আর ভারতকে জাতিসংঘ কাঠামোর মধ্যে বিশ্ব পরাশক্তি হতে হলে প্রতিবেশীদের আস্থা সৃষ্টি করতেই হবে। ড. গওহর রিজভী বলেন, ট্রানজিট নিয়ে ভারতের সাথে নতুন করে চুক্তির দরকার নেই। ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্ধিরা চুক্তিই এজন্য যথেষ্ট। এখন ওই চুক্তির আলোকে ট্রানজিটের ক্ষেত্রগুলো কেবল সম্প্রসারণ করা হবে। তবে যোগাযোগসহ বাংলাদেশের অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরই ট্রানজিট কার্যকর হবে। ড. গওহর রিজভী বলেন, ট্রানজিটের বিনিময়ে কোনো ফি নেয়া হবে না। তবে শুধুমাত্র সড়ক-নৌসহ যোগাযোগ অবকাঠামো ব্যবহারের কারণে যানবাহনের উপর ফি নেয়া হবে।  
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ট্রানজিটের ফলে বাংলাদেশের অবকাঠামো খরচ, বিশেষত সড়ক এবং সমুদ্র ও স্থল বন্দরের ব্যবস্থাপনা খরচ বেড়ে যাবে। এনবিআর পরীা করে দেখেছে, বাংলাদেশের ভূখণ্ড দিয়ে ভারতের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে মালপত্র পরিবহন করলে বাংলাদেশের স্থল বন্দরে ও সমুদ্র বন্দরে প্রচুর স্ক্যানিং মেশিন বসাতে হবে, জোরদার করতে হবে কাস্টমসের মনিটরিং ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বাড়াতে হবে জনবল। আধুনিকায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বন্দরগুলোকে অটোমেশন করতে হবে। এসব পদপে নিতে হলে বাংলাদেশ সরকারকে বন্দরের আরো উন্নয়ন করতে হবে, বাড়াতে হবে দতা ও লোকবল। বছরে দশ কন্টেইনার মালামাল আসুক কিংবা হাজার কন্টেইনার মালামাল আসুক, লোকবল ও যন্ত্রপাতি একই সমান ব্যবহার করতে হবে। এতে সরকারের ব্যয় প্রচুর বেড়ে যাবে। নিরাপত্তা ব্যয়ও প্রচুর বাড়াতে হবে। ট্রানজিট ফি আরোপের মাধ্যমে ওই ব্যয় কিছুটা মেটানো গেলেও সড়ক সংস্কার ও রণাবেণের জন্য আলাদাভাবে প্রতিবছর প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। তাছাড়া ট্রানজিট পথে ভারতের কোনো মালামাল কোনোভাবে তিগ্রস্ত হলে কিংবা হুমকির সম্মুখীন হলে ভারত ভবিষ্যতে এই অজুহাতে ওইসব রুট পাহারার জন্য নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীও আনতে চাইবে। যেমনটি তারা ইতোপূর্বে ঢাকায় দূতাবাস ও বিমান বন্দরের পাহারার নামে করেছে। এতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব দুর্বল হবে।
এনবিআর বলেছে, প্রতিটন মালপত্রের জন্য ৫৮০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হলেও তা সার্বিক অবকাঠামো খাতের বিনিয়োগ উঠিয়ে আনার জন্য মোটেই যথেষ্ট নয়। কারণ ভবিষ্যতে কি পরিমাণ মালামাল পরিবহন হবে তা মোটেই নিশ্চিত নয়। কিন্তু এজন্য বিনিয়োগে কোনো কমতি করা যাবে না। হাজার ট্রাক মালের জন্যও যে বিনিয়োগ, এক ট্রাক মালের জন্যও সেই একই বিনিয়োগ করতে হবে বাংলাদেশকে। এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা শুধু আমাদের প্রশাসনিক খরচ তুলে আনতে উল্লিখিত হারে ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করেছি। অবকাঠামোর দায়িত্ব আমাদের বিভাগের নয়। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। ট্যারিফ কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, এনবিআরের দেয়া সুপারিশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে। ট্রানজিট চুক্তির পর ফিসের বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।
ভারত, নেপাল ও ভুটানকে প্রস্তাবিত ট্রানজিট সুবিধা প্রদানের ল্েয গত বছরের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে সমঝোতা চুক্তি স্বারের পর ডিসেম্বরে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমানকে প্রধান করে একটি কোর কমিটি গঠন করা হয়। এর আগে গত বছরের জুনে বাজেট পাশের সময় এনবিআর একটি মাশুল ধার্য্য করে দেয়। যা ভারত মেনে নেয়নি। এরপর গঠিত কোর কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ট্রানজিটের বিনিময়ে বাংলাদেশের আর্থিকভাবে লাভালাভের কথা বললেও ফি কত হবে, সে বিষয়ে প্রথমে কিছু বলেনি। পরে তীব্র সমালোচনার প্রেেিত রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়, ট্রানজিটের জন্য সীমিত ফি বা মাশুল আদায় করা হবে। এরপর থেকে ফি নির্ধারণে কাজ শুরু হয়। এ সময় জানানো হয়, ট্রানজিটের পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হলে আগামী তিন বছরে বাংলাদেশের ৭০০ কোটি ডলার বা ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশের সড়ক, রেল ও নৌপথের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে ওই টাকা ব্যয় করতে হবে। এর মধ্যে সড়কপথে ১২ হাজার কোটি, রেলপথে ৩২ হাজার কোটি এবং নৌপথে ৬ হাজার কোটি টাকা লাগবে। ইতোমধ্যে ভারত এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে উচ্চ সুদে ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদানে সম্মত হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ট্রানজিট সফল বাস্তবায়নের েেত্র সম্পদের অপ্রতুলতা দরিদ্র বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। যে কারণে আপাতত ট্রানজিটের আংশিক বাস্তবায়ন করতে চায় বর্তমান সরকার এবং মনমোহন সিংয়ের আসন্ন সফরে ট্রানজিট চুক্তির মাধ্যমে সেই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে আন্তর্জাতিক নিয়ম ও ডব্লিউটিওর বিধান অনুযায়ী ট্রানজিটের দাবিকারী ও সুফল ভোগকারী দেশটিরই এখানে পুরোপুরি বিনিয়োগ বা শর্তবিহীন অনুদান দেবার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার রহস্যজনক কারণে তা দাবি না করায় সুচতুর ভারত এর পুরো দায় বর্তমানে বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। অথচ তীব্র বাজেট ঘাটতির দরিদ্র দেশ বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগের েেত্র এর চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি অগ্রাধিকারের বহু খাত পড়ে রয়েছে। 
ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবর রহমান জানান, ভারতকে ট্রানজিট দিলে অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারে আগামী তিন-চার বছরে কমপে ৭০০ কোটি ডলার বা ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু পদ্মা বা যমুনার ওপর পরিপূর্ণ রেলসেতু এখনো নেই, তাই রেলসহ পদ্মা সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত রেলপথে ট্রানজিট দেয়া সম্ভব নয়। সীমিত আকারে কেবল চট্টগ্রাম বন্দর থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্য ত্রিপুরা, মিজোরাম ও আসামের সঙ্গে রেলপথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। এজন্য অন্তত বছর দেড়েক সময় লাগবে। তবে এতে আবার দুর্বল চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ বেড়ে যাবে, যাতে বাংলাদেশের স্থানীয় আমদানি-রফতানিকারকরা তির সম্মুখীন হতে পারেন। ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান আরো বলেন, শুধু ভারত, নেপাল ও ভুটানকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়া হবে না, এটি এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গেও সংযুক্ত হতে হবে। তিনি স্বীকার করেন, কোর কমিটিকে প্রতিবেদন তৈরির জন্য মাত্র তিন মাস সময় দেয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ট্রানজিট ট্রাফিক ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের চিত্র পুরোপুরি তুলে আনা সম্ভব নয়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ট্রানজিট অবকাঠামো তৈরিতে ৭০০ কোটি ডলার ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে। এর মধ্যে সুবিধাভোগকারী দেশগুলো কত টাকা দেবে তাও বিবেচনায় আনতে হবে। তিনি মনে করেন, কোনো দেশের ভৌগোলিক অবস্থা প্রকৃতি প্রদত্ত। তাই প্রতিবেশী দেশের অযৌক্তিক কোনো সুবিধা চাওয়া উচিত নয়। বরং ভালো অর্থনীতিই রাজনৈতিক সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়তা করে। পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষক ড. সাদিক আহমেদ বলেন, ট্রানজিটকে অনেকে কিছু সার্বভৌমত্ব হারিয়ে ভারতকে বিশেষ সুবিধা দেয়া হিসেবে দেখেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের কৌশলগত সহযোগী ক্যাস্টলিয়ার সমীা (২০১০) তুলে ধরে দেখান যে, বাংলাদেশে ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে প্রতিটি ট্রিপের জন্য ৫৫ ডলার মাশুল আরোপ করতে পারে। আর প্রতি ১০০ কিলোমিটারের জন্য ১১ ডলার মাশুল আরোপ করা যায়।

No comments

Powered by Blogger.